চাহিদার ঝিমিয়ে থাকা এবং কলকারখানার উৎপাদনে ধাক্কার ফলে দেশের অর্থনীতির বৃদ্ধির (Economic Growth) গতি শ্লথ হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। আশঙ্কা সত্যি হলে এবং বৃদ্ধি ৭ শতাংশে আটকে গেলে সৌদি আরবের কাছে দ্রুততম বৃদ্ধির অর্থনীতি (Fastest Growing Economy) হওয়ার তকমা হারাতে পারে ভারত। কারণ পশ্চিম এশিয়ার ওই দেশটির জিডিপি (GDP) ৭.৬ শতাংশ হারে বাড়তে পারে বলে আশা। এর আগে জুলাই-সেপ্টেম্বরেও তারা ৮.৭ শতাংশ বৃদ্ধি দেখেছে। সেখানে ভারতে জিডিপি বেড়েছিল ৬.৩ শতাংশ হারে।
কী বলছে এনএসও
বিশ্ব বাজারে ভারতকে পণ্য উৎপাদনের কেন্দ্র হিসাবে তুলে ধরতে চায় মোদী সরকার। কিন্তু শুক্রবার কেন্দ্রের পরিসংখ্যান দফতরের (এনএসও) (NSO) দেওয়া প্রাথমিক পূর্বাভাসে দেখা গেল, চলতি অর্থবর্ষে (Financial Year) সেই উৎপাদন শিল্পই বেকায়দায়।
গত বছর ৯.৯ শতাংশ বৃদ্ধি দেখলেও, এ বার তার হার হতে পারে মাত্র ১.৬ শতাংশ। বৃদ্ধির হার কমতে পারে নির্মাণ ও খনন শিল্পেও। এনএসও-র (NSO) অনুমান, এ বার জিডিপি (GDP) বৃদ্ধির হার হতে পারে ৭ শতাংশ। যা গত অর্থবর্ষের (২০২১-২২) ৮.৭ শতাংশ বৃদ্ধির তুলনায় কম তো বটেই, কেন্দ্রের আগের ৮-৮.৫ শতাংশ অনুমানের থেকেও নীচে।
কেন তৈরি হচ্ছে অনিশ্চয়তা
বিশেষজ্ঞদের দাবি, লাগাতার চলতে থাকা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, জোগান সঙ্কট, চড়া মূল্যবৃদ্ধি, সুদের হার বৃদ্ধি এবং শ্লথ চাহিদা বিশ্ব অর্থনীতিতে (World Economy) তীব্র অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। ভারতীয় অর্থনীতি (Indian Economy) চাঙ্গা হচ্ছে বলে কেন্দ্র বার বার দাবি করলেও, বিশ্ব বাজারের কারণে আশঙ্কা বহাল থাকার কথা মেনেছে তারাও। ৭ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধির (Economic Growth) প্রাথমিক পূর্বাভাসও তারই প্রমাণ। অনিশ্চয়তার কারণে এর আগে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক (Reserve Bank) বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছেঁটে ৭.৮ থেকে ৬.৮ শতাংশে নামিয়েছে। কেন্দ্রের এই হার অবশ্য তার থেকে বেশি। বিভিন্ন মূল্যায়ন ও আর্থিক সংস্থাও তা কমিয়েছে। যা ৭ শতাংশের মধ্যেই ঘোরাফেরা করছে।
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন (Nirmala Sitaraman) পরের অর্থবর্ষের (২০২৩-২৪) বাজেট (Union Budget) পেশ করবেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বরাদ্দ এবং পূর্বাভাসের হিসাব কষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে এনএসও-র প্রাথমিক পূর্বাভাসে দেওয়া পরিসংখ্যানগুলি।
আরও পড়ুন: অবশেষে আশার আলো, উৎপাদন শিল্পে গতি আসার ইঙ্গিত দিল সমীক্ষা