ইরান-ইজরায়েল মধ্যে বাড়তে থাকা উত্তেজনার জেরে বিশ্বজুড়ে সোনার চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে সোনার দিকে ঝুঁকছেন, যার ফলে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় MCX-এ প্রতি ১০ গ্রাম সোনার মূল্য প্রায় ৭৬,১১৪ টাকায় পৌঁছেছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এই উর্ধ্বমুখী প্রবণতা আরও কিছুদিন স্থায়ী হতে পারে, কারণ আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজারে অনিশ্চয়তা ক্রমশ বাড়ছে।
Geojit Financial Services-এর কমোডিটি প্রধান হরিশ ভি জানান, “মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনার কারণে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার চাহিদা বেড়েছে। আসন্ন উৎসব ও বিয়ের মরসুমের জন্য গয়নার চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ভারতীয় টাকার দুর্বলতাও স্থানীয় বাজারে সোনার মূল্যের বৃদ্ধি ঘটিয়েছে। তবে, মার্কিন ডলারের শক্তিশালী পুনরুদ্ধার সোনার বড় ধরনের মূল্যবৃদ্ধিকে কিছুটা স্লথ করেছে। এখন বিনিয়োগকারীরা শুক্রবারের জন্য নির্ধারিত মার্কিন Non-farm payrolls তথ্যের দিকে তাকিয়ে আছেন, যা মার্কিন অর্থনীতির ভবিষ্যত নীতি সম্পর্কে একটি দিক নির্দেশ করবে।”
এদিকে, ভারত সম্প্রতি সোনার আমদানির শুল্ক হ্রাস করেছে, যা স্থানীয় বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্রেতারা অনুকূল দামের সুযোগ নিতে আগ্রহী। অপরদিকে, চিনে ঐতিহ্যবাহী বিনিয়োগ যেমন রিয়েল এস্টেট এবং শেয়ারবাজারের প্রতি আস্থা কমে যাওয়ায় সোনার দিকে ঝোঁক বেড়েছে। চিনের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কও তার সোনার মজুত ক্রমশ বাড়িয়ে চলেছে।
ইরান-ইজরায়েল উত্তেজনায় তেলের দাম বৃদ্ধি, ভারতের অর্থনীতিতে কতটা প্রভাব পড়তে পারে?
JM Financial Services Ltd-এর EBG – কমোডিটি ও কারেন্সি রিসার্চের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রণব মের জানান, “বিশ্ববাজারের সাম্প্রতিক অস্থিরতার কারণে সোনার বাজারে চাহিদা অব্যাহত রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা, ETF বিনিয়োগকারীদের ক্রয় বৃদ্ধি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সোনার মজুত বৃদ্ধি, এবং বৈশ্বিক সুদের হার কমার সম্ভাবনা – এই সবকিছুই সোনার মূল্যবৃদ্ধির কারণ। বর্তমান পরিস্থিতিতে সোনার মূল্য ৭৪,৮০০ বা ৭৩,৯৮০ টাকার নিচে নামার সম্ভাবনা কম, বরং ৭৮,৫০০ থেকে ৮০,০০০ টাকার মধ্যে চলে যেতে পারে।”
বাজার বিশেষজ্ঞরা আরও জানান, সাম্প্রতিককালে বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় সুদের হার কমানোর পদক্ষেপ নিচ্ছে, যা সোনার বাজারকে আরও উর্ধ্বমুখী করতে পারে। এছাড়াও, আসন্ন উৎসব ও বিয়ের মরসুমে সোনার গয়নার চাহিদা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা বাজারকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।
সূত্র: বিজনেস টু ডে