সোনার দাম ছয় সপ্তাহে প্রায় ৮৩৫০ টাকা বেড়ে গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেকারত্বের হার মে ২০২৪ থেকে সর্বনিম্নে পৌঁছানোর ফলে বিনিয়োগকারীদের জন্য সোনাকে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আর্থিক অনিশ্চয়তা, ইউএস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শুল্ক সংক্রান্ত র্যান্ট এবং ভারতীয় রুপির দুর্বলতার প্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীরা আগামী ছয় সপ্তাহ ধরে সোনার দামে বৃদ্ধি প্রত্যাশা করছেন। এমসিএক্স-এ ১০ গ্রাম সোনার হার নতুন শিখরে পৌঁছে প্রায় ৮৫,২৭৯ টাকা ছিল, যা পরে স্থিত হয়ে ৮৪,৯০০ টাকায় নেমে এসেছে। এক সপ্তাহে ১০ গ্রাম সোনায় ২৫০০ টাকার বেশি বেড়েছে। গত ছয় সপ্তাহে সোনার দাম মোট প্রায় ৮৩৫৬ টাকা বেড়ে প্রায় ১০.৯০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারেও সোনার দাম ধারাবাহিকভাবে ছয় সপ্তাহ বেড়ে ২,৮৮৬ ডলার প্রতি আউন্সের স্তরে পৌঁছেছে।
এই ধারাবাহিক বৃদ্ধির পেছনে যে কারণগুলো কাজ করছে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিসেম্বর ২০২৪-এর শেষ সপ্তাহ থেকে সোনার দাম বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। প্রথমদিকে, ইউএস ফেডের রেট কাটের প্রত্যাশা ও ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের পূর্বে অতিরিক্ত উদ্দীপনা জোগানো ছিল। আন্তর্জাতিক বাজারে ট্রাম্পের রক্ষা নীতি ও বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কার কারণে বিনিয়োগকারীরা সোনাকে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বিবেচনা করেছে। দেশের অভ্যন্তরে, ভারতীয় রুপির দুর্বলতাও সোনার দামে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে সোনার দামে উত্থানের প্রধান কারণ নিরাপদ আশ্রয় চাহিদা। ট্রাম্প প্রশাসন চিনের উপর ১০ শতাংশ আমদানিকৃত শুল্ক আরোপ করেছে এবং মেক্সিকো ও কানাডার উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছে। এই তিনটি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বাণিজ্যিক অংশীদার, যাদের মোট বাণিজ্য প্রায় ২ ট্রিলিয়ন ডলার। চিনও তার শুল্ক ও অন্যান্য রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ করে, যার ফলে ইউএস-চিন বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কা বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রযুক্তিগত দিক থেকে সোনার দাম ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে, তবে কিছুটা সমন্বয়মূলক সংশোধনের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রাথমিক সহায়ক স্তর হিসেবে ১০ গ্রাম সোনার জন্য প্রায় ৮৩,৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যদি এই স্তর ভেঙে যায়, তবে পরবর্তী পতন ৮৩,৩০০ টাকা পর্যন্ত যেতে পারে।
বর্তমান উত্থানকে সমর্থন করে সোনার উচ্চ মূল্যের কারণ থাকলেও বিনিয়োগকারীদের সম্ভাব্য সংশোধন সম্পর্কে সতর্ক থাকতে এবং প্রধান সহায়ক স্তরগুলি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।