বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ বিবেক দেবরায় শুক্রবার ৬৯ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন। পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত বিবেক অর্থনৈতিক নীতি এবং উন্নয়ন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য পরিচিত ছিলেন। তিনি পুণেতে গোখলে ইনস্টিটিউট অফ পলিটিক্স অ্যান্ড ইকোনমিক্স (GIPE)-এর চ্যান্সেলর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন, যেখানে অর্থনৈতিক গবেষণার প্রসারে তিনি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলেন। উল্লেখযোগ্য ভাবে তিনি ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান।
শোকবার্তা প্রধানমন্ত্রী মোদীর
দেবরয়ের মৃত্য়ুর খবর পেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শোক প্রকাশ করে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদে “একজন প্রজ্ঞাবান পণ্ডিত” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ লিখেছেন, “ড. বিবেক দেবরায়জি এক মহান পণ্ডিত ছিলেন, যিনি অর্থনীতি, ইতিহাস, সংস্কৃতি, রাজনীতি এবং আধ্যাত্মিকতার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষ ছিলেন। তাঁর কাজের মাধ্যমে তিনি ভারতের বুদ্ধিবৃত্তিক প্রাঙ্গণে স্থায়ী ছাপ রেখেছেন। জননীতির বাইরে, প্রাচীন গ্রন্থসমূহে তাঁর আগ্রহ ছিল, যা তরুণ প্রজন্মের কাছে তাঁর লেখা পৌঁছে দিয়েছে।”
কে ছিলেন বিবেক দেবরায়?
বিবেক দেবরায় ছিলেন এক বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, লেখক এবং পণ্ডিত। তাঁর মৃত্যুতে ভারতীয় অর্থনৈতিক নীতি এবং সাহিত্যে এক বিশাল শূন্যতার সৃষ্টি হল। নরেন্দ্রপুরের রামকৃষ্ণ মিশন স্কুল, কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ, দিল্লি স্কুল অফ ইকোনমিক্স এবং কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজ থেকে শিক্ষা লাভ করেন বিবেক। তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ, পুণের গোখলে ইনস্টিটিউট অফ পলিটিক্স অ্যান্ড ইকোনমিক্স, দিল্লির ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ফরেন ট্রেড এবং অর্থ মন্ত্রকের ইউএনডিপি প্রকল্পে পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন।
ভারতের অর্থনৈতিক নীতিকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদান আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে তার নেতৃত্ব ভারতের অর্থনৈতিক সংস্কার, সুশাসন, এবং রেলপথ আধুনিকায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। জননীতির পাশাপাশি সংস্কৃত গ্রন্থের প্রতিও ছিল তাঁর অকৃত্রিম টান। মহাভারত এবং গীতার মতো প্রাচীণ ধর্মগ্রন্থকে আধুনিক ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন তিনি। তাঁর বহু কাজ অর্থনীতি এবং সাংস্কৃতিক গবেষণার মধ্যে এক সংযোগ তৈরি করেছে, যা তাঁকে একটি অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।
বিবেক দেবরায়ের প্রয়াণে ভারতীয় বুদ্ধিবৃত্তিক এবং অর্থনৈতিক জগতে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।