বাংলাbiz ডেস্ক: মোরাটোরিয়ামের সময়কালে ঋণের কিস্তি তথা ইএমআইয়ের উপর যে বাড়তি সুদ চাপছে, তা মকুব করা হলে কী প্রভাব পড়তে পারে সেই বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ল কেন্দ্রীয় সরকার।
জানা গিয়েছে, প্রাক্তন কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (CAG) রাজীব মেহর্ষিকে ওই কমিটির প্রধান করা হয়েছে। এ ছাড়াও কমিটিতে রয়েছেন এসবিআই-এর প্রাক্তন ম্যানেজিং ডিরেক্টর বি শ্রীরাম এবং আইআইএম-এর প্রাক্তন অধ্যাপক এবং আরবিআইয়ের আর্থিক নীতি নির্ধারক কমিটির প্রাক্তন সদস্য রবীন্দ্র ঢোলাকিয়া।
করোনাভাইরাস লকডাউনের (Coronavirus lockdown) সময় ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (RBI) অনুমোদনের ভিত্তিতে ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি ঋণের কিস্তি তথা ইএমআই পরিশোধ করার ব্যাপারটি মুলতুবি রাখার সুযোগ দেয়। দু’টি পর্যায়ে মোট ছ’মাসের জন্য এই সুবিধা দেওয়া হয়। এই মোরাটোরিয়ামের (moratoriuam) মেয়াদ শেষ হয়েছে ৩১ আগস্ট।
মোরাটোরিয়ামের সময়কালে ইএমআইয়ের উপর বাড়তি সুদ (সুদের উপর সুদ) নেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। গত বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে দু’সপ্তাহের সময় দেয়। এর পরই জানা যায়, বিষয়টির পর্যালোচনায় একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কেন বিশেষজ্ঞ কমিটি
গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অশোক ভূষণ, আর সুভাষ রেড্ডি এবং এমআর শাহের বেঞ্চ বলে, “ঋণগ্রহীতাদের স্বস্তি দিতে হবে। তাঁদের ত্রাণের জন্য সরকারকে তথ্যসমূহ বিবেচনা করতে হবে।”
একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ বলে, “দুই সপ্তাহের মধ্যে কী হতে চলেছে? … আমরা কেন্দ্রকে সময় দিচ্ছি, তবে একটা সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তের কথা জানাতে হবে।”
২৮ সেপ্টেম্বর ফের এই মামলার শুনানির দিন ধার্য করেছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পরই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নতুন বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ার কথা ঘোষণা করা হয়।
কমিটির করণীয় কী
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই তাদের রিপোর্ট জমা দিতে বিশেষজ্ঞ কমিটিকে বলা হয়েছে। কেন্দ্রকে সুপ্রিম কোর্ট দু’ সপ্তাহের কিছু বেশি সময় দিয়েছে। সময় থাকতেই বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট হাতে পেতে চাইছে কেন্দ্র।
১ মার্চ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দু’টি পর্যায়ে ছ’মাসের জন্য ইএমআই দেওয়া স্থগিত রাখার সুবিধা পেয়েছিলেন ঋণগ্রহীতারা।
তিন সদস্যের কমিটিকে বলা হয়েছে, মোরাটোরিয়ামের সময়টুকুর জন্য যে অতিরিক্ত সুদ ঋণগ্রহীতাদের উপর চাপতে পারে তা মকুব করা হলে, জাতীয় অর্থনীতিতে তার প্রভাব কতটা পড়তে পারে, তার আনুমানিক পরিমাপ করতে হবে।
কোভিড পরিস্থিতিতে সমাজের বিভিন্ন অংশকে আর্থিক সংকট থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে ঠিক কী ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত সে সব সম্পর্কেও পরামর্শ চাওয়া হয়েছে কমিটির কাছ থেকে।
প্রসঙ্গত, এর আগে সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানিতে কেন্দ্র জানায়, “ঋণের উপর মোরাটোরিয়ামের সুবিধা দু’ বছর বাড়ানো যেতে পারে”। (বিস্তারিত পড়ুন এখানে: ঋণের ইএমআই স্থগিতের মেয়াদ দু’বছর বাড়ানো যেতে পারে, সুপ্রিম কোর্টে প্রস্তাব কেন্দ্রের)। কিন্তু মোরাটোরিয়ামের সময়কালের জন্য ইএমআইয়ের উপর গ্রাহককে বাড়তি সুদ গুনতে হবে কি না, সে বিষয়ে এখনও স্থির সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি কেন্দ্র।
বাংলাbiz-এ আরও পড়তে পারেন
নামমাত্র লগ্নি, বাড়ির ছাদে বা বারান্দায় শুরু করুন মাছচাষ