ভারতে ইন্টারনেট পরিষেবার ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা হতে চলেছে। ইলন মাস্কের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট কোম্পানি স্টারলিঙ্ক বাজারে প্রবেশ করতেই দেশীয় ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বড় প্রতিযোগিতার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। এর ফলে মুকেশ ম্বানির রিলায়েন্স জিও এবং সুনীল মিত্তলের ভারতী এয়ারটেল তাদের বর্তমান ইন্টারনেট ট্যারিফ কমাবে কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
স্টারলিঙ্কের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা
স্টারলিঙ্কের প্রধান প্রতিশ্রুতি হল, সারা ভারত জুড়ে দ্রুত এবং স্থিতিশীল ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদান করা, যা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোকেও সংযুক্ত করার ক্ষমতা রাখে। তবে ভারতে স্টারলিঙ্কের ব্যবসা শুরু করার জন্য ভারত সরকারের তথ্য সুরক্ষা এবং আনুষঙ্গিক নিয়মাবলী মানার শর্ত রয়েছে। স্টারলিঙ্ক এ বিষয়ে সরকারের শর্ত মেনে নিতে প্রস্তুত, তবে লাইসেন্স পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দিতে হবে।
Jio এবং Airtel বনাম Starlink: প্রতিযোগিতার চিত্র
রিলায়েন্স জিও এবং ভারতী এয়ারটেল ইতিমধ্যে ভারতে ফাইভ-জি ও ফিক্সড ওয়্যারলেস অ্যাক্সেস (FWA) পরিষেবা দিতে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে। তবে এখনো দেশের কিছু দূরবর্তী এলাকা ইন্টারনেট পরিষেবার বাইরে রয়েছে। এই সমস্ত এলাকায় সরাসরি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট পৌঁছাতে সক্ষম হওয়ায় স্টারলিঙ্ক একটি শক্তিশালী প্রতিযোগী হয়ে উঠতে পারে।
স্পেকট্রাম বরাদ্দ বনাম নিলাম
ভারতের প্রচলিত ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলি স্পেকট্রাম অধিকার লাভের জন্য বিপুল অর্থ ব্যয়ে নিলামে অংশ নেয়। তবে স্টারলিঙ্ক যদি প্রশাসনিক পথে স্পেকট্রাম বরাদ্দ পায়, তাহলে তাদের খরচ অনেক কম হবে। ফলে দেশীয় সংস্থাগুলি স্পেকট্রাম নিলামের খরচ নিয়ে সমস্যায় পড়তে পারে, কারণ তারা ইতিমধ্যেই নিলামের মাধ্যমে উচ্চ মূল্যে স্পেকট্রাম অধিকার লাভ করেছে।
স্টারলিঙ্ক বনাম জিও এবং এয়ারটেল
ভারতের বৃহত্তর অংশে জিও এবং ওয়ারটেল ইন্টারনেট পরিষেবা বিস্তৃত করেছে। তবে প্রত্যন্ত কিছু অঞ্চল এখনও সংযুক্ত নয়। স্টারলিঙ্ক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সরবরাহের মাধ্যমে এই এলাকাগুলিতেও ইন্টারনেট নিয়ে আসতে পারে। এর ফলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষও সহজে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পাবে, যা জিও এবং ওয়ারটেল-এর গ্রাহক সংখ্যাকে প্রভাবিত করতে পারে।
গ্রাহকদের ধরে রাখতে কি জিও এবং ওয়ারটেল ট্যারিফ কমাবে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্টারলিঙ্কের সাশ্রয়ী মূল্যের উচ্চগতির ইন্টারনেট পরিষেবা ভারতীয় গ্রাহকদের আকর্ষণ করতে পারে। জিও এবং এয়ারটেল ইতিমধ্যে তাদের ট্যারিফ বাড়িয়েছে, যা তাদের গ্রাহক সংখ্যায় প্রভাব ফেলেছে। স্টারলিঙ্কের প্রতিযোগিতা মোকাবেলা করতে ভারতীয় সংস্থাগুলি তাদের ট্যারিফ হ্রাস করার পথে হাঁটতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা, যাতে তাদের গ্রাহকেরা অন্যদিকে আকৃষ্ট না হয়।