রিটায়ারমেন্টের পর নিশ্চিন্ত জীবনযাপন করতে চাইলে সঞ্চয়ের পরিকল্পনা শুরু করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধরনের ফান্ডে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। শেয়ারভিত্তিক ফান্ড দীর্ঘ মেয়াদে সম্পদ বৃদ্ধির সুযোগ দেয়, অপরদিকে ঋণভিত্তিক ফান্ড সুরক্ষিত আয় নিশ্চিত করে। এর পাশাপাশি দীর্ঘ মেয়াদী কর সাশ্রয়কারী প্রকল্প যেমন লোকপল্লী সঞ্চয় প্রকল্প, প্রবীণ নাগরিক সঞ্চয় প্রকল্প ও কৃষক উন্নয়ন পত্রের মতো প্রকল্পেও কিছু টাকা রাখলে উচ্চ সুদের হার ও কর সাশ্রয়ের সুবিধা মেলে।
তবে কেউ চাইলে সম্পূর্ণ রিটায়ারমেন্ট পরিকল্পনার দায়িত্ব কোনও পেশাদার ফান্ড পরিচালকের হাতে ছেড়ে দিতে পারেন সমাধানমূলক ফান্ডে বিনিয়োগ করে। এই ধরনের ফান্ডের নিয়ম অনুযায়ী অন্তত পাঁচ বছরের জন্য অর্থ আটকে রাখতে হয় অথবা রিটায়ারমেন্ট গ্রহণের বয়স পর্যন্ত, যেটি আগে ঘটে।
বর্তমানে দেশে ২৯টি এই ধরনের ফান্ড রয়েছে, যার মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে বড় ফান্ডগুলি হল —
- ইউটিআই রিটায়ারমেন্ট ফান্ড (৪৭০৩ কোটি টাকা)
- নিপ্পন ইন্ডিয়া রিটায়ারমেন্ট ফান্ড (৩১৫৬ কোটি টাকা)
- এইচডিএফসি রিটায়ারমেন্ট সেভিংস ফান্ড (৬৫০৩ কোটি টাকা)
- এসবিআই রিটায়ারমেন্ট বেনেফিট ফান্ড অ্যাগ্রেসিভ প্ল্যান (২৯০০ কোটি টাকা)
কেন রিটায়ারমেন্ট পরিকল্পনায় ফান্ড গুরুত্বপূর্ণ?
বিশেষজ্ঞদের মতে, আগেকার দিনের মতো সরকারি পেনশন এখন আর পাওয়া যায় না। আজকের দিনে বেশিরভাগ মানুষ বেসরকারি চাকরি করেন অথবা নিজের ব্যবসা চালান। ফলে রিটায়ারমেন্টের পরিকল্পনা আরও বেশি জরুরি হয়ে উঠেছে।
তাছাড়া পাঁচ বছরের জন্য বিনিয়োগ আটকে রাখার নিয়ম থাকায় শৃঙ্খলা বজায় থাকে এবং বাজারের স্বল্পমেয়াদী ওঠানামার ঝুঁকি কমে যায়। ফান্ডে শেয়ারের অংশ থাকে সম্পদ বৃদ্ধির জন্য ও ঋণপত্রের অংশ থাকে সুরক্ষার জন্য। ফলে বিনিয়োগকারীর ঝুঁকি গ্রহণের মানসিকতার ভিত্তিতে সম্পদ গড়ে তোলা সহজ হয়।
সুতরাং সমাধানমূলক ফান্ড বা নিজস্ব পদ্ধতি—যে রাস্তাই বেছে নিন না কেন, নির্ভরযোগ্য পরিকল্পনা থাকলে রিটায়ারমেন্টের দিনগুলি হবে চিন্তামুক্ত ও স্বাচ্ছন্দ্যময়।