সম্প্রতি ইউনিফায়েড পেনশন স্কিম (ইউপিএস) ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর উদ্দেশ্য হল সরকারি কর্মচারীদের নির্দিষ্ট এবং ন্যূনতম পেনশনের নিশ্চয়তা দেওয়া। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, এমন কোনো স্কিম আছে কি, যেটার মাধ্যমে বেসরকারি জায়গায় কর্মরত কর্মচারীরাও অবসর গ্রহণের পর পেনশনের সুবিধা পেতে পারেন।
এমন প্রশ্নের উত্তর হল, হ্যাঁ। প্রভিডেন্ট ফান্ডে (পিএফ) বিনিয়োগ করে আপনি অবসর গ্রহণের পরে বেসরকারি জায়গায় কাজ করা যে কোনো ব্যক্তি পেনশন পেতে পারেন। তবে এর জন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে।
ইউপিএস-এ পেনশন পেতে হলে সরকারি কর্মচারীদের কমপক্ষে ১০ বছর কাজ করতে হবে। বেসরকারি খাতের কর্মীদেরও একই শর্ত। যদি তাঁরা পেনশন পেতে চান, তাহলে তাঁদের ন্যূনতম এক দশকের জন্য কর্মচারী পেনশন স্কিমে (ইপিএস) বিনিয়োগ করতে হবে। তাহলে আপনি ৫৮ বছর বয়সের পরে পেনশন পেতে শুরু করবেন।
এ ক্ষেত্রে সাড়ে নয় বছর কাজ করার পর সেটাও নিয়ম অনুযায়ী ১০ বছর হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু, আপনি যদি এর চেয়ে কম কাজ করেন, তাহলে আপনি অবসর নেওয়ার আগেও টাকা তুলতে পারবেন, কারণ সেক্ষেত্রে আপনি পেনশন পাওয়ার অধিকারী নন।
স্কিমটি এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন (ইপিএফও) দ্বারা পরিচালিত হয়। এতে বিনিয়োগ করতে আপনাকে আলাদা করে কিছু করতে হবে না। প্রতি মাসে আপনার বেতন থেকে পিএফ টাকা কেটে নেওয়া হয়। এতে আপনি এবং আপনার কোম্পানি সমানভাবে অবদান রাখে। কর্মচারীর মূল বেতনের ১২ শতাংশ + ডিএ প্রতি মাসে পিএফ অ্যাকাউন্টে যায়। কোম্পানিও একই পরিমাণ অবদান রাখে।
মনে রাখবেন, এর মধ্যে কর্মচারীর পুরো ভাগটাই যাবে ইপিএফ-এ। কিন্তু, কোম্পানির মাত্র ৩.৬৭ শতাংশ অবদান ইপিএফ-এ যায়। বাকি ৮.৩৩ শতাংশ কর্মচারী পেনশন স্কিমে (ইপিএস) যায়। এখান থেকেই আপনি অবসর গ্রহণের পরে পেনশন পাবেন।
আপনি যদি দুটি প্রতিষ্ঠানে পাঁচ বছর ধরে কাজ করেন বা চাকরির মধ্যে ব্যবধান থাকে, তাহলেও আপনি পেনশন পাবেন। তবে, শর্ত হল আপনাকে কমপক্ষে ১০ বছরের জন্য চাকরির মেয়াদ সম্পূর্ণ করতে হবে এবং পিএফ অ্যাকাউন্টে অবদান রাখতে হবে।
বলে রাখা ভালো, বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত কোনো কর্মী ইউনিভার্সাল অ্যাকাউন্ট নম্বর (ইউএএন) পরিবর্তন করবেন না। তা হলে কিন্তু একটি একক ইউএএন দিয়ে ১০ বছরের মেয়াদ সম্পূর্ণ হবে না। আপনি যদি একাধিকবার চাকরি পরিবর্তন করে থাকেন, তাহলে একই ইউএএন থাকলে, সমস্ত পিএফ অ্যাকাউন্টে থাকা টাকা একইভাবে দেখা হবে।
প্রসঙ্গত, ইপিএস-এর অধীনে পারিবারিক পেনশনের ব্যবস্থাও রয়েছে। পেনশনভোগী জীবীত না থাকলে তাঁর স্ত্রী/স্বামী পেনশন, সন্তান পেনশন পেতে পারেন। কর্মচারীর মৃত্যুর পর স্বামী/স্ত্রী যদি দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন, তাহলে পেনশন সুবিধা সন্তান পেয়ে থাকে।
আরও পডুন: ব্যাঙ্কে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন সমকামী যুগল, জানাল কেন্দ্র