২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে রেকর্ড সংখ্যক বিনিয়োগকারী তাঁদের সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান (এসআইপি) বন্ধ করেছেন বলে জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অফ মিউচুয়াল ফান্ডস ইন ইন্ডিয়া (AMFI)। ওই মাসে বন্ধ হওয়া এসআইপি-এর সংখ্যা ১.৬২ কোটিরও বেশি, যা আগের মাসগুলোর তুলনায় তিন গুণেরও বেশি।
মার্চে বন্ধ হওয়া এসআইপি-এর সংখ্যা ছিল ৫১.৫৫ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ৫৪.৭ লাখ এবং জানুয়ারিতে ৬১.৩৩ লাখ।
তবে এই পরিসংখ্যানের মাঝেও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে—এসআইপি অবদান বা অব্যাহত মাসিক বিনিয়োগের পরিমাণ কিন্তু বেড়েই চলেছে। এপ্রিল মাসে এসআইপি-এর মাধ্যমে মোট অবদান দাঁড়িয়েছে ২৬,৬৩২ কোটি টাকা, যা মার্চে ছিল ২৫,৯২৬ কোটি এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫,৯৯৯ কোটি টাকা।
এত সংখ্যক এসআইপি হঠাৎ বন্ধ হওয়ার কারণ কী?
বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, “২০২০ সালের পর বিপুল সংখ্যক নতুন বিনিয়োগকারী বাজারে এসেছেন। গত পাঁচ বছরে শেয়ার বাজারে ধারাবাহিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে, ফলে অনেকেরই ভবিষ্যৎ রিটার্ন নিয়ে অবাস্তব প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। নিফটি ফিফটি গত পাঁচ বছরে যেখানে বার্ষিক গড়ে ২৫.৭ শতাংশ হারে বেড়েছে, গত ১০ বছরে তা মাত্র ১৩.৯ শতাংশ। এই দীর্ঘমেয়াদি হারে রিটার্নও যথেষ্ট আকর্ষণীয়, তবে প্রত্যাশা কিছুটা সংযত রাখা দরকার।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বহু বিনিয়োগকারী নিজেদের আর্থিক লক্ষ্য পূরণ করেই এসআইপি বন্ধ করছেন। বাজারের উত্থান-পতনের মধ্যেও তাঁরা স্থির থেকেছেন এবং এখন ধীরে ধীরে সচেতনভাবে এক্সিট করছেন। এটি কোনো নেতিবাচক মনোভাব নয়। কারণ বিনিয়োগে পরিপক্বতার ইঙ্গিত এই সিদ্ধান্ত।
অন্যদিকে, অনেকেই এসআইপি বন্ধ করলেও নতুন স্কিমে বিনিয়োগ করছেন বা পোর্টফোলিও পুনর্গঠন করছেন, যা আর্থিক সচেতনতার লক্ষণ। এসআইপি-এর মেয়াদও সীমিত—উদাহরণস্বরূপ, ২০২০ সালে শুরু হওয়া পাঁচ বছরের এসআইপি এপ্রিলে শেষ হয়েছে।
অতএব, এসআইপি বন্ধের এই সংখ্যা দেখে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এসআইপি-এর মাসিক অবদান এখনও সর্বকালীন সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে, যা প্রমাণ করে যে সাধারণ বিনিয়োগকারীর মধ্যে মিউচুয়াল ফান্ডে আস্থা অটুট রয়েছে।