অবসরের পর নিশ্চিত জীবন চান? কোথায় বিনিয়োগ করবেন জেনে নিন

retirement

বিবি ডেস্ক: অবসর (Retirement)। শব্দটির সঙ্গে জুড়ে থাকে ভবিষ্যতের বহু বিষয়। এখন থেকে ঠিক কতটা বিনিয়োগ করলে অবসরকালীন জীবন সুনিশ্চিত করা যাবে তা নিয়ে চর্চা চলে বিস্তর। সরকার এবং বেশির ভাগ বেসরকারি সংস্থার কর্মীরা অবসর নেন ৬০ বছর বয়স হলে। কোন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা উচিত? নিশ্চিত আয় দিতে পারে কোন প্রকল্প?

লগ্নির আদর্শ সময়

ঋণের মতো লাফিয়ে বৃদ্ধি দূর অস্ত্‌, চড়া মূল্যবৃদ্ধির (Inflation) আবহে কিছু দিন আগেও জমা টাকায় সুদ ছিল তলানিতে। অক্টোবরের গোড়া থেকে ছবিটা বদলাতে থাকে। কয়েকটি স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে সরকার সুদের হার বাড়ানোর কথা ঘোষণার পর থেকেই ব্যাঙ্কগুলি নামে সেই রাস্তায়। শুরু হয় সুদ বাড়িয়ে আমানত টানার যুদ্ধ। ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিও (এনবিএফসি) (NBFC) তাতে শামিল হয়। অনুমান, ডিসেম্বরে মূল্যবৃদ্ধিতে আরও রাশ টানতে ঋণের উপর আর একদফা সুদ বাড়াতে পারে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক (Reserve Bank)। সে ক্ষেত্রে আরও কিছুটা সুদ বাড়ানো হতে পারে আমানতেও। অর্থাৎ অবসরের সময়ে পিএফ এবং গ্র্যাচুইটি বাবদ হাতে আসা মোটা টাকা লগ্নির জন্য এই সময়টাকে আদর্শ ভাবা যেতে পারে।

কোথায় বিনিয়োগ

প্রশ্ন হল, অবসরের (Retirement) সময়ে একসঙ্গে মোটা টাকা পেলে তা কোথায় রাখা যেতে পারে এবং কী ভাবে পরিচালনা করা যেতে পারে বিভিন্ন অর্থকরী ব্যাপার। দেখে নেওয়া যাক—

• প্রাপ্ত শেষ সম্বল রাখতে হবে ১০০% সুরক্ষিত জায়গায়, যেখান থেকে মোটামুটি ভাল আয় আসবে।

• ব্যাঙ্ক এবং এনবিএফসি-র (NBFC) বিভিন্ন জমা প্রকল্পে এখন সুদ বাড়ছে। এই সময়ে টাকা রাখতে হবে বড় মেয়াদে, যেখানে ভাল হারে সুদ দেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে মূল্যবৃদ্ধি কমলে সুদের হার কমতে পারে।

• বর্তমানে লগ্নি (Investment) থেকে গড়ে ৭.৫% আয় সম্ভব। সেই হিসেবে দেখে নিন প্রাপ্ত টাকা থেকে বছরে এবং মাসে কত আয় হতে পারে। আয় অনুযায়ী একটি মাসিক খরচের বাজেট তৈরি করুন।

• সব টাকা খরচ না করে কিছুটা আগের মতোই নিয়মিত সঞ্চয় করতে হবে ভবিষ্যতে বেড়ে ওঠা দামকে সামাল দেওয়ার জন্য।

• অবসরের পরে করযোগ্য আয়ের ব্যবস্থা থাকলে সঞ্চয় করতে হবে কর সাশ্রয়কারী প্রকল্পে।

• অবসরের পরে স্বাস্থ্য বিমা থাকা খুবই জরুরি। এর বার্ষিক প্রিমিয়ামে কর ছাড় মেলে।

• যাঁদের আয় ৫ লক্ষ টাকার মধ্যে থাকবে, তাঁরা ৮৭এ ধারা অনুযায়ী ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত আয়কর রিবেট পাবেন। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে তাঁদের কোনও কর দিতে হবে না।

• যাঁদের বার্ষিক আয়ের উপরে কর ধার্য হবে না, তাঁরা উৎসে যাতে কর কাটা না হয় (টিডিএস) তার জন্য ১৫এইচ ফর্ম দাখিল করতে পারেন।

• উপরে বলা জায়গাগুলি ছাড়াও টাকা রাখা যেতে পারে মিউচুয়াল ফান্ডের ডেট ফান্ডে (যেখানে তহবিল খাটানো হয় মূলত ঋণপত্রে) কিংবা ব্যালেন্সড ফান্ডে (যেখানে ফান্ডের তহবিল শেয়ার বাজার এবং বন্ড, দু’টি জায়গাতেই খাটানো হয়)। যাঁদের নিয়মিত আয় প্রয়োজন, তাঁরা বেছে নিতে পারেন সিস্টেমেটিক উইথড্রয়াল প্ল্যান বা এসডব্লিউপি।

• সেভিংস অ্যাকাউন্টে মোটা টাকা ফেলে না রেখে লিঙ্কড এফডি অথবা অটো সুইপের সুবিধা নিতে পারেন। যেখানে সেভিংস অ্যাকাউন্টে জমা টাকা একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ পেরিয়ে গেলেই বাড়তি অংশটুকু ফিক্সড ডিপোজ়িট অ্যাকাউন্টে ঢুকে যায়। নির্দিষ্ট সীমা ঠিক করে দিতে হয় গ্রাহককেই। প্রয়োজনে সেভিংস অ্যাকাউন্টের মতো সেই টাকা তোলাও যায়। এতে সুদ বেশি পাবেন।

• কোনও কোনও নতুন প্রজন্মের বেসরকারি ব্যাঙ্ক প্রবীণদের জমা টাকায় ৮.৭৫% পর্যন্ত সুদ দিচ্ছে। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের তপশীলভুক্ত যে কোনও ব্যাঙ্কে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আমানত ডিআইসিজিসি দ্বারা গ্যারান্টিপ্রদত্ত।

• মিউচুয়াল ফান্ডের লিকুইড এবং আল্ট্রা লিকুইড ফান্ডে এখন রিটার্ন পাওয়া যাচ্ছে ৬ শতাংশের কাছাকাছি। জায়গাটা সেভিংস অ্যাকাউন্টের বিকল্প হতে পারে। লিকুইড ফান্ড এক ধরনের ডেট বা ঋণপত্রভিত্তিক ফান্ড, যা স্বল্পমেয়াদি হয়।

আরও পড়ুন: নিফটি ৫০ সূচক কী? কী ভাবে এটি কাজ করে?

বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখেন ১০ থেকে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সাংবাদিকরা। সমস্ত তথ্য যাচাই করে তবে বাংলাবিজে প্রতিবেদনগুলি লেখা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.