অনেক ছাত্রছাত্রীর কাছেই শিক্ষাক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনের পথে শিক্ষাঋণ একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক। তবে, সঠিক ক্রেডিট স্কোর এবং পরিচ্ছন্ন ক্রেডিট হিস্ট্রি না থাকলে সহজ শর্তে শিক্ষাঋণ পাওয়াটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
তবুও এমন পরিস্থিতিতে হতাশ হওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ, শক্তিশালী ক্রেডিট প্রোফাইল না থাকলেও শিক্ষার জন্য ঋণ পাওয়ার বেশ কিছু রাস্তা খোলা আছে। নী চে সেগুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হল:
সরকারি প্রকল্পের সুবিধা
ভারত সরকার অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল শ্রেণির (EWS) ছাত্রছাত্রীদের সহায়তার জন্য একাধিক প্রকল্প চালু করেছে। সেন্ট্রাল সেক্টর ইন্টারেস্ট সাবসিডি স্কিম (CSIS) প্রকল্প অনুযায়ী, পেশাদার ও কারিগরি কোর্সে পড়া উপযুক্ত ছাত্রছাত্রীরা মরাটোরিয়াম (ঋণ মকুব) সময়ে সুদের উপর ভর্তুকি পান। তবে, এটি শুধুমাত্র তাঁদের জন্যই প্রযোজ্য যাঁদের পরিবারিক বার্ষিক আয় ৪.৫ লক্ষ টাকার নীচে।
এছাড়া, ক্রেডিট গ্যারান্টি ফান্ড ফর এডুকেশন লোন (CGFSEL) নামক আরেকটি প্রকল্পের মাধ্যমে গ্যারান্টি প্রদান করা হয়, যার ফলে জামানতের প্রয়োজন কমে যায় এবং যাঁদের ক্রেডিট ইতিহাস নেই, তাঁদের জন্যও ঋণ পাওয়া সহজ হয়।
এই প্রকল্পগুলির মূল উদ্দেশ্য হল, ছাত্রছাত্রীরা যখন পড়াশোনা করছেন, তখন রোজগার করতে না পারলেও ভবিষ্যতে যাতে সহজে ঋণ শোধ করতে পারেন, সেই সুযোগ দেওয়া।
এই প্রকল্পগুলি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখে নেওয়া উচিত।
সহ-আবেদনকারী ও জামানতের সাহায্য নেওয়া
শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকগুলি সাধারণত এমন কোনও সহ-আবেদনকারী (যেমন পিতা-মাতা বা অভিভাবক), যাঁর ক্রেডিট স্কোর ভালো, তাঁকে সঙ্গে নিয়ে ঋণের আবেদন গ্রহণ করে। এতে ঝুঁকি কমে এবং ঋণ মঞ্জুরির সম্ভাবনা বাড়ে।
উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, আক্সিস ব্যাংক, এইচডিএফসি ব্যাংক, আইসিআইসিআই ব্যাংক ইত্যাদি ব্যাংক বিভিন্ন ধরণের জামানতের (যেমন ফিক্সড ডিপোজিট, সম্পত্তি) বিনিময়ে শিক্ষাঋণ দিয়ে থাকে।
এনবিএফসি, ব্যাংক ও বিকল্প ঋণদাতার সাহায্য নেওয়া
এনবিএফসি (Non-Banking Financial Companies) এবং বিভিন্ন প্রাইভেট ব্যাংক আজ শিক্ষাঋণের ক্ষেত্রে কার্যকরী বিকল্প হয়ে উঠেছে।
উদাহরণ:
- এইচডিএফসি ব্যাংক শিক্ষাঋণ শুরু হয় বার্ষিক ৯.৫৫% সুদে
- বাজাজ ফাইন্যান্সের ক্ষেত্রে শুরু ১০.২৫% থেকে
আবেদনকারীদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
১. সুদের হার: কোনও ক্রেডিট স্কোর ছাড়া নেওয়া ঋণে সুদের হার তুলনামূলকভাবে বেশি হতে পারে।
২. ঋণের পরিমাণ: জামানত বা সহ-আবেদনকারীর সাপোর্ট না থাকলে ঋণের পরিমাণ সীমিত হতে পারে।
৩. সুদের হার: কোনও ক্রেডিট স্কোর ছাড়া নেওয়া ঋণে সুদের হার তুলনামূলকভাবে বেশি হতে পারে।
৪. গোপন খরচ: প্রসেসিং ফি, প্রিপেমেন্ট চার্জ ইত্যাদি স্পষ্ট করে জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
৫. মোট ফেরতযোগ্য অর্থ: শুধুমাত্র ঋণের পরিমাণ নয়, সেই সঙ্গে কত সুদ জমবে তা বুঝে পুরো ফিরিয়ে দিতে হবে কত, সেই হিসেব রাখা জরুরি।
সুতরাং, ক্রেডিট স্কোর না থাকলেও সচেতনভাবে বিকল্পগুলি ব্যবহার করে শিক্ষাঋণ পাওয়া সম্ভব। উপযুক্ত তথ্য এবং পরিকল্পনার মাধ্যমে আপনি আপনার উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন সফল করতে পারেন।