ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মুদ্রানীতি কমিটির (MPC) আসন্ন বৈঠকে নীতি রেপো রেট ৬.৫% এ অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। ইরান-ইজরায়েল সংঘাতের কারণে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকায় মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যেতে পারে, যদিও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি স্থিতিশীল। এই পরিস্থিতিতে বাড়ি ঋণগ্রহীতারা একটি বড় প্রশ্নের সম্মুখীন—ঋণ আগাম পরিশোধ করবেন, নাকি সেই অর্থ বিনিয়োগে কাজে লাগাবেন?
ঋণের সুদ হার দীর্ঘমেয়াদে মূলধন ফেরতের চেয়ে বেশি হয়ে যেতে পারে। বাড়ি ঋণ আগাম পরিশোধের মাধ্যমে ঋণগ্রহীতারা তাদের অর্থের একটি বড় অংশ বাঁচাতে এবং ঋণ পরিশোধের মেয়াদ কমাতে পারেন। তবে, এ ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন:
১. কর সুবিধা
প্রত্যেক ঋণগ্রহীতা আয়কর আইনের ৮০সি ধারা অনুযায়ী বছরে ১.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত মূলধন এবং ২৪ ধারায় বছরে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সুদে করছাড়ের সুবিধা পেতে পারেন। কিন্তু ঋণ আগাম পরিশোধ করলে এই সুবিধা হারানোর সম্ভাবনা থাকে।
২. ঋণ পরিশোধ বনাম নতুন ঋণ গ্রহণ
ঋণের সুদ হার অপেক্ষাকৃত কম থাকলে ঋণ পরিশোধ করার আগে ভবিষ্যতের জরুরি খরচ ও পরিকল্পিত ব্যয় বিবেচনা করা জরুরি। ঋণ পরিশোধে আর্থিক স্থিতিশীলতা আসতে পারে, তবে নতুন ঋণ গ্রহণেরও ঝুঁকি থেকে যায়।
ভ্রমণকে আরও সাশ্রয়ী এবং আরামদায়ক করতে পারে ট্রাভেল ক্রেডিট কার্ড
৩. ঋণ আগাম পরিশোধের উপকারিতা
বাড়ি ঋণের অগ্রিম পরিশোধ ঋণগ্রহীতাকে ঋণমুক্ত করে দ্রুত আর্থিক স্বাধীনতা এনে দেয়, যা ভবিষ্যতের আর্থিক লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করে।
৪. বিনিয়োগের সুযোগ
ঋণ পরিশোধ না করে সেই অর্থ অন্যত্র বিনিয়োগ করলে দীর্ঘমেয়াদে ভালো মুনাফা হতে পারে। বিশেষত ইকুইটি মিউচুয়াল ফান্ড বা এনবিএফসি বন্ডে বিনিয়োগ ভবিষ্যতে উচ্চ রিটার্ন দিতে পারে, যা ঋণ পরিশোধের চেয়ে লাভজনক হতে পারে।
৫. অগ্রিম পরিশোধ বনাম জরুরি তহবিল
অগ্রিম পরিশোধ করা হলেও জরুরি তহবিল থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঋণ পরিশোধের আগে নিজের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত সঞ্চয় রাখতে হবে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নীতিমালা ঋণগ্রহীতাদের এই সিদ্ধান্তকে জটিল করছে। সুদের হার স্থিতিশীল থাকলে ঋণ পরিশোধ বনাম বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়ে ধন্দে থাকতেই হচ্ছে ঋণগ্রহীতাদের।